নিজস্ব প্রতিবেদক :: সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মাস্টারমাইন্ড বা মূলহোতা স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর প্রিন্টিং মেশিনম্যান আবদুস সালামকে আটক করেছে সিআইডি। আজ মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম।
সোমবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর রামপুরা এলাকা থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ঢাবি কর্তৃপক্ষের করা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সন্ধান পায় সাইবার পুলিশ সেন্টার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত এস এম সানোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় সাইবার পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম বলেন, ‘সানোয়ারের তথ্যের সূত্র ধরে চলতি বছরের ১৯ জুলাই ঢাকার মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় মেডিকেল প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাস্টারমাইন্ড জসিম উদ্দিন ভূঁইয়াসহ জাকির হোসেন দিপু এবং পারভেজ খানকে। এ সময়ে জসিমের কাছ থেকে দুই কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক, দুই কোটি ২৭ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং পারভেজের কাছ থেকে ৮৪ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়। যা মেডিকেল ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা। ২০ জুলাই মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা করে সিআইডির সাইবার পুলিশ। এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপ্রত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও সাতজনকে গ্রেপ্তার করে তারা। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে আরেক মাস্টারমাইন্ড স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর মেশিনম্যান আবদুস সালামের নাম। মামলার খবর পেয়ে গা ঢাকা দেয় আবদুস সালাম। পরে ৫ অক্টোবর রাজধানীর রামপুরা বনশ্রী এলাকার জি ব্লকে বিশেষ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় তাকে। এর আগেও মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের একটি মামলায় তাকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে সিআইড ’।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রশ্নপত্র ফাঁসচক্রের অন্যতম জসিম-সালামসহ অন্যান্য সদস্যদের অবৈধভাবে আয় করা সম্পদের খোঁজ শুরু করেছে সিআইডির সাইবার পুলিশ। ইতোমধ্যে জসিম উদ্দিনের ৩৮টি একাউন্টের সন্ধান পেয়েছে। যেখানে প্রায় ২১ কোটি ২৭ লাখ টাকা রয়েছে। আর জসিমের স্ত্রী জেসমিন আরা শিল্পীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তিন কোটি ৭৮ লাখ টাকার সন্ধার পেয়েছে সিআইডি। এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান শেষ হলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনকারীদের বিরুদ্ধে মানিলান্ডারিং মামলা করবে সাইবার পুলিশ। প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত পাঁচ থেকে ছয়জন চিকিৎসক এবং তিনটি কোচিং সেন্টারের সম্পৃক্ততাও পেয়েছে সিআইডি।
পাঠকের মতামত: